উখিয়ায় বেড়েছে অবৈধভাবে সিম বিক্রি: অধিকাংশ ক্রেতাই রোহিঙ্গা

নিজস্ব প্রতিবেদক •

কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং বাজারে অবৈধভাবে মোবাইল ফোনের সিম বিক্রি বেড়েছে। পাশের শরণার্থী শিবিরে বাস করা রোহিঙ্গারা এ বাজারে আসতে পারেন অনায়াসে। ফলে এসব অবৈধ সিমের অধিকাংশ ক্রেতাই রোহিঙ্গা। শুধু কুতুপালং বাজারই নয়, শরণার্থী শিবিরের পাশে থাকা উপজেলার অধিকাংশ বাজারেই চলছে অবাধে এসব সিম বেচাকেনা। এতে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত রোহিঙ্গাদের দৌরাত্ম্য আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয় বাসিন্দারা।

বাজারের মোবাইল সরঞ্জাম বিক্রির বেশ কয়েকটি দোকান থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়াই বাংলাদেশি সিম কিনছেন। অপরাধীদের পাশাপাশি নিজ দেশে বা বিদেশে বসবাসরত আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন রোহিঙ্গারা। এদিকে এসব রোহিঙ্গাদের টার্গেট করে বাংলাদেশের সব মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর কুতুপালং বাজারে অবৈধভাবে সিম বিক্রির ব্যবসা চালাচ্ছে।

গত রোববার বিকেলে ওই বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা আবুল হোসেন (৪০) বাজারে দাঁড়িয়ে মোবাইলে কথা বলছেন। মোবাইলে ব্যবহৃত সিমটি বাংলাদেশি কি না জিজ্ঞেস করলে আবুল হোসেন বলেন, ‘এই মোবাইলে রবি সিম আছে, মোবাইল আর সিম এখান থেকেই কিনেছি। আমার ভাই বাইরে কাজ করেন, তাঁর সঙ্গে কথা বলি।’

বালুখালী বাজারের এক মোবাইল দোকানের ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমার দোকানে রোহিঙ্গা ক্রেতারা আসেন। আমরা তাঁদের কাছে সিম বিক্রি করতে না চাইলে স্থানীয়কে সঙ্গে নিয়ে এসে তাঁদের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে সিম সংগ্রহ করেন। রোহিঙ্গারা বাংলাদেশি নয়, তারা কোনোভাবেই আমাদের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে মোবাইল সংযোগ নিতে পারে না। অবৈধভাবে সিম বিক্রিতে জড়িত অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধেও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’

কক্সবাজারে কর্মরত মোবাইল অপারেটর রবির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বিপণন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের কোম্পানির সিম জেলার প্রতিটি বাজারেই বিক্রি হয়। কুতুপালং বাজারও এর বাইরে নয়। জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহের মাধ্যমে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে আঙুলের ছাপ নিয়ে আমাদের ডিলার ও সিম ক্রেতারা এসব সিম সাধারণ ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করেন।’

রাজাপালং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘বাজার ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে মোবাইল ব্যবসায়ীদের রোহিঙ্গাদের সিম বা প্রযুক্তিসামগ্রী বিক্রি না করার নির্দেশনা আছে। কেউ অমান্য করলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সমিতি।’

ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত ১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক নাঈমুল হক বলেন, ‘বিভিন্ন সময় শিবির এলাকায় ধরা পড়া রোহিঙ্গা অপরাধীদের কাছ থেকে বাংলাদেশি মোবাইল অপারেটরের সিম উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি উদ্বেগজনক। রোহিঙ্গারা যেন বাংলাদেশি সিম কিনতে না পারে, সে ব্যাপারে কঠিন অবস্থানে যাচ্ছে এপিবিএন।